একজনের অসুখ আর কিছুদিন পরপর সে তার নিজের স্বাস্থ্যের অবস্থার দিকে তাকায়। শক্তি বাড়ছে কিনা, ঘুম ঠিকমত হচ্ছে কিনা, খাওয়ার রুচী হচ্ছে কিনা, শরীর ভাল লাগে কিনা। ব্যাবসায়ী ব্যাবসা করে, (কিন্তু) ব্যাবসা করার জন্য ব্যাবসা করেনা। ব্যাবসা করে লাভের জন্য। অন্য লোক তার দিকে তাকায়। তাকায় মানে কি? যে পাঁচ বছর ব্যাবসা করার পর তার জামাকাপড়ের অবস্থা কেমন। কিন্তু যদি দেখে যে আগের মত এখনো ছেড়া গেঞ্জী, তাহলে বুঝা যায় ব্যাবসা ঠিকমত হচ্ছে না।
তো আমলের জন্য আমরা কি দেখবো? যেখান থেকে বুঝবো যে তার আমল হচ্ছে কিনা। রোগীকে কেউ জিজ্ঞাসা করল যে ‘আপনার চিকিৎসার খবর কি?’ সে বলল যে ‘আমি এতগুলো বড়ি খেয়েছি আর এতগুলো শিশি খেয়েছি’। এই বলাতে প্রশ্নের উত্তর হয়না। বলল যে বড়ি খেয়েছো, শিশি খেয়েছো, শরীরের খবর কি? ভাল হয়েছো কিনা? যদি বলে যে ‘শরীরের দিকে তো খেয়াল করিনি, কিন্তু ঔষুধ ঠিকমত খেয়েছি কিনা সেই হিসাব ভালমত আছে’। লোকে বলবে যে ‘লোকটা পাগল নাকি বোকা’। বুদ্ধি তো খারাপ না, ঔষুধের হিসাব রেখেছে। বরং একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ, সে তার শরীরের অবস্থার দিকে তাকাবে। যদি স্বাস্থ্য ভাল হয় তাহলে চিকিৎসা ভাল। কতগুলো বড়ি খেয়েছো তাতে কি আসে যায়।
ব্যাবসা করেছে যে এত মাল এলো আর এত মাল গেল। এত মাল এলো আর এত মাল গেলো ঠিক আছে, কিন্তু তোমার পকেটে টাকা থাকল কত? বাড়ির খরচ ঠিকমত তুমি দিতে পারছ কিনা? বলল ‘ওটা তো জানিনা’। তো মাল কি এলো আর কি গেলো, ঐটা দিয়ে কাজ কিসের যদি না জানো।
তো দ্বীনের যে কাজই হোক, সেই কাজে আমাকে দেখতে হবে যে আমাকে ফায়দা দিচ্ছে কিনা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রত্যেক জিনিসের ফায়দা।
ছাত্র পড়াশোনা করে নম্বর পাওয়ার জন্য। কলেজে ভর্তি হয়েছে, ক্লাস করছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “তোমার পড়াশোনার খবর কি’। তো বলল যে ‘অনেক টাকা পেয়েছি”। ক্লাস করে অনেক টাকা পেয়েছো কেমন করে। বলল যে একটা গ্রুপের সাথে ঢুকেছি তাতে ইনকাম ভালই হয়। ফিস ওরা কিছু দিয়েছে। তো বুঝতে পেরেছে পড়াশোনা তো কিছুই হচ্ছে না। দুইদিন পর হয়ত জেলে যাবে, তাও যদি কিসমত ভাল থাকে আর নাহলে লাশ পাওয়া যাবে একদিন রাস্তাঘাটে।
তো বুঝতে হবে যে কোন জিনিসের কি ধরনের লাভ। হাল চাষ করছি, কৃষি কাজ করছি আর লাভ হচ্ছে ফসল। পড়াশোনা করছে তার লাভ হচ্ছে ডিগ্রী। দ্বীনের যে কাজ করছি ঐটার লাভ কি?
তো দ্বীনের কাজ করলাম। অমুক পীরের কাছে মুরীদ হয়েছি। নিয়মিত যায়। তো পীরের কাছে যে মুরীদ হয়েছো, নিয়মিত যাও – ফায়দা কি হল? ফায়দা হল যে এক প্লট জমি কিনেছি, একটা ফ্লাটের অর্ডার দিয়েছি। এটা তো কোন লাইনের কথা হল না। তারপর খোঁজ নিল যে পীরটা কে? সে কি জিকির করে নাকি স্মাগলিং করে। তো ফায়দার লাইন জানা দরকার। কি ফায়দা আমি আশা করি। অনেক সময় দ্বীনের কাজের মধ্যে না থাকলে আর কি ফায়দা আশা করি ঐটাই জানিনা।
একজন কোন এক জায়গার, কোন এক জেলার জিম্মাদার ব্যাক্তি চিল্লা গেছেন। চিল্লায় থাকা অবস্থায় উনার চাকুরীর প্রমোশন হয়েছে। ব্যাংকের ম্যানেজার ছিলেন, এজিএম হয়েছেন। তো ফিরে এসে দেখেন যে প্রমোশন হয়ে গেছে। ম্যানেজার ছিলেন, এজিএম হয়ে গেছেন। তো বয়ানের মধ্যে আল্লাহর পথের বরকতের কথা বলছে। আল্লাহর পথের গায়েবী নূসরত। যে জিএম ছিলাম আর এজিএম হয়ে গেছি। একজন আলিম এই কথা শুনে বললেন ‘এই লোকের উপর তো কুফরীর ফতোয়া হয়ে যাবে’। সূদের ব্যাংকে চাকুরী করে তার প্রমোশন হয়েছে, ওটাকে গায়েবী নুসরত বলছে না মদদ বলছে বা কিছু একটা বলছে আর ওর উপর তো ফতোয়া কুফরী। তবলীগে গেছে কি দ্বীনদার হওয়ার জন্য নাকি কাফির হওয়ার জন্য। তো আমি না বুঝি যদি আমি খুজছি কি তাহলে তো উল্টো জিনিস খুজবো।
খোঁজার গল্প আছে। ল্যাম্প পোষ্টের নীচে, সন্ধ্যাবেলা। অল্পরাত। ল্যাম্প পোষ্টের নীচে কিছু একটা খুজছে। ইতিমধ্যে প্রতিবেশী একজন এসে তার সাথেও শরীক হল। প্রতিবেশী শরিক হলো যেহেতু সাহায্য করার দরকার সেই হিসেবে। তো উনিও খুজতে আরম্ভ করলেন। বেশ কিছুক্ষন খুজলেন। তারপর যিনি শরিক হয়েছেন জিজ্ঞাসা করলেন ‘কি খুজছেন?’ অনেক্ষন খুজার পর জিজ্ঞাসা করলেন। এতক্ষন খুজেছেন তার সাথী হয়ে, কিন্তু কি খুজছেন তা জিজ্ঞাসা করেননি। (ভেবেছেন) উনিও খুজছেন আমিও খুজি। (তো) জিজ্ঞাসা করলেন কি খুজছেন। বললেন যে ‘চাবি’। চাবি হারিয়ে গেছে, চাবি খুজছি। তখন আবার খুজতে আরম্ভ করলেন। তখন আবার নিয়্যত পরিবর্তন করলেন। আগে তো জানতেন না যে কি খুজছেন। এখন খুজছেন চাবি। কিছুক্ষন খুজার পর পেলেননা, তখন আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘চাবি আপনি হারিয়েছেন কোথায়?’ বললেন যে ‘বাড়ির ভিতরে’। তো হারিয়েছেন বাড়ির ভিতরে আর এখানে কেন খুজছেন? বললেন, ‘এখানে লাইট আছে দেখা যাবে, বাড়ির ভিতরে যেখানে চাবি হারিয়েছে সেখানে অন্ধকার’।
তো আমাদের দ্বীনের মেহনত যদি এরকম হয় যে ব্যাস্ত হয়ে খুজছি ঠিকই, কিন্তু কি খুজছি , কোথায় খুজছি, কেন খুজছি তা জানি না, তাহলে এই খুজা দিয়ে কোথায় যাব? তবলীগ করল, চিল্লা দিল আর কয়েকদিন পর দেখা গেল বেশ ধনী হয়ে গেছে। আগে টাকা পয়সা সেরকম ছিল না, এখন অবস্থা বেশ ভাল। বহুত খায়েরে বরকত দেখা যাচ্ছে। এগুলো বাস্তব ঘটনা। এই যে ব্যাংকের কথা বলা হল– এটা বাস্তব ঘটনা। আর কিছু কিছু লোক ভাল সম্পদশালী হয়ে যাচ্ছে আর সে মনে করছে বরকত আসছে। শয়তান তো সাংঘাতিক ধাঁধার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। জানার দরকার যে আমি কি খুজছি, কি চাই। আর এই ভুলের মধ্যে আমরা বেশিরভাগ মানুষ পড়ে আছি।
তো একজন তবলীগে গেল। যাওয়ার আগে ওর বড় দোকান ছিল। বড় কাপড়ের দোকান। কাপড়ের বিরাট ব্যাবসায়ী। তারপর আস্তে আস্তে করে চিল্লা দেয়, তিন চিল্লাও দেয়, মোকামি কাজ করে। আর এদিকে ব্যাবসার অবনতি হচ্ছে। উন্নতি তো হচ্ছেই না, বরং ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছে। কিন্তু তার চিল্লা, তবলীগের কাজ এগুলো কমছে না, বরং বাড়ছে। বেশ কয়েক বছর পরে এমন অবস্থা গেল যে এখন ফেরিওয়ালা হয়েছে। যে একসময় বড় কাপড়ের ব্যাবসায়ী ছিল এখন কাধে কিছু কাপড় নিয়ে মহল্লায় ফেরি দিতে যায়। তো তার ঘটনা আলোচনার মধ্যে যে এই লোক চিল্লাও দেয়, তিন চিল্লাও দেয়, তসবিয়্যাত আদায় করে, হালাল ব্যাবসাও করে। কিন্তু দোষ তো কিছুই দেখা যায় না। তখন সব বাকী যত তবলীগওয়ালা আছে, পীর-দরবেশরা আছে সবাই চিন্তায় পড়ে যাবে যে ঘটনা কি! কেউ বলবে মায়ের বদদুয়া লেগেছে। আবার কেউ বলবে ‘তবলীগ করেছে ঠিকই, কিন্তু মুরব্বীদের ইতাআদ করেনি। এজন্য পরিণতি খারাপ হয়েছে’। তো নিজ আন্দাজমত ব্যাখ্যা দিবে।
সব শুনার পর বলা হল যে ঘটনা কিন্তু আবুবকর সিদ্দীক রাঃ এর। (সুবহানাল্লাহ)। তখন বলে যে, ‘ইয়ে মানে, হ্যা, ওটার কেস আলাদা”। না বুঝার কারণে ভাল কি, মন্দ কি কিছুই বুঝে না।
আম কিনতে গেছে। আম যে বিক্রি করছে আর ক্রেতা, কারোই আমের সমন্ধে ভাল জ্ঞান নেই। আমের কোন অংশ খায় আর কোন অংশ খায়না সেই ব্যাপারে অজ্ঞ। তো আম ছোট। কিন্তু বিক্রেতা বলছে আম ছোট হলে কি হবে, আটি কিন্তু মোটা আছে। ক্রেতাও ভাবলো কথাতো ঠিক। তাহলে আম কিনি। তো এই জাতীয় যদি ক্রেতা হয় আর এই জাতীয় বিক্রেতা হয়, তাহলে মেহনত করছি কিন্তু কি চাই তাও জানিনা, কি পাই তাও জানিনা। আল্লাহতাআলা দিল, ভাল দিল না মন্দ দিল তাও বুঝতে পারছি না। ভাল দিল আল্লাহতাআলা, (অথচ) আমি নারাজ। নারাজ হওয়ায় আল্লাহ তাআলা রাগ প্রকাশ করলেন আর খারাপ জিনিস দিলেন। এখন আমি সন্তুষ্ট। এজন্য আল্লাহওয়ালাদের জীবনের দিকে খুব বেশি করে তাকানো যে আমি চাই কি? তা না হলে মেহনত তো করবো, কিন্তু কি চাই তাও জানিনা। (সেক্ষেত্রে) বড় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাব।
দৃষ্টান্ত হরেকরকম পাওয়া যাবে। এই তাবলীগের মেহনতের মধ্যেই পাওয়া যাবে কিছু লোক যাদের জীবন পাক হয়েছে। আগে ব্যাবসায় ভেজাল করতো, এখন আর ভেজাল করেনা। আগে অনেক টাকা ছিল, এখন খুব টানাটানির সংসার। কিন্তু হালাল। আগে প্রচুর ছিল হারাম, এখন হালাল। সে নিজে বুঝে অতএব সে সন্তুষ্ট।
তার কোন অভিযোগ নেই। বরং মনে করে আল্লাহতাআলার বড় মেহেরবানী। কেন মেহেরবানী? কারণ আল্লাহতাআলাই বড় মেহেরবানী করে হালাল খাওয়ার তৌফিক দিয়েছেন। আগে হারাম খেতাম আর এখন হালাল খাই। তো বড় সন্তুষ্ট। ওর দিকেই তাকিয়ে আরেকজন বলবে যে এই লোক তো তবলীগ করে ডুবে গেল। আগে গাড়ি ছিল আর এখন সাইকেলও নেই।
একবার রংপুর না কোন অঞ্চলে, অবশ্য ভুলে গেছি সফরে ছিলাম। তো ওখানকার একজনের কথা বলল যে কোন এক সাথী চালের ব্যাবসা করতো। এক সময় ওর ট্রাক লোড করে চাল ঢাকায় আসতো। এর মানে বেশ মোটা অংকের ব্যাবসা করে। যে ট্রাক পাঠাতে পারে সেতো আর ছোটখাটো ব্যাবসায়ী না। তো তার বর্তমান অবস্থা হলো এই যে বাজার করার জন্য বাজারে গিয়ে আধা কেজি চাল কিনে। ঘরের মধ্যেও নেই। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এরকম হালতে তার হাবভাব, কথাবার্তার ধরন কি? পেরেশান, অস্থির নাকি সে মুতমাইন (সন্তুষ্ট) আছে? তারা বলল যে সে মুতমাইন আছে। তো আলহামদুলিল্লাহ। সে ঠিক লাইনেই আছে। তা না হলে সে পেরেশান হবে; আর বলবে সর্বনাশ, এই তবলীগ করে আমার এই সর্বনাশ হয়ে গেছে। কিন্তু সে মুতমাইন আছে আর মুতমাইন তবলীগের মেহনত করেই হয়েছে। নিশ্চয় সে চিনতে পারছে যে ভাল কি মন্দ কি। পরিমাণ অনেক কম কিন্তু অবস্থা সে বুঝতে পারছে।
আরেক জায়গায় তার একেবারে বিপরীত হয়। কিছুই ছিলনা আর কিছুদিনের মধ্যেই বিরাট এক বাড়ির মালিক হয়ে গেছে। তো চিনার দরকার যে আমি কি চাই। এজন্য সাহাবাদের জীবনের দিকে খুব বেশি নজর রাখা। ফাযায়েলে সাদাকাতের যদি খুব বেশি চর্চা করি তাহলে সেটা আমাকে দিক নির্দেশনা দিবে যে আমি কোথায় চলছি। দুর্ভাগ্যবশত আমরা ফাযায়েলে সাদাকাতের চর্চা খুব কম করি। আর আল্লাহওয়ালাদের জীবনের চর্চাও খুব কম করি।
অনেক ক্ষেত্রে বেশ বড় একটা অংশ তবলীগের দিকে ঠেলে বড় গলদ দিক নির্দেশনা দেয়। ছাত্রদের মধ্যে তো প্রচলিত কথা যে ভাল রেজাল্ট করে ভাল পজিশনে যেতে হবে। ম্যাজিস্টেট হও, এই হও সেই হও। তবলীগে যাওয়ার আগে দুনিয়ার যে জযবা ছিল, তবলীগে যাওয়ার পরে ঐটা বেড়ে গেছে। কারণ আগে তো তাকে কেউ এই ব্যাপারে তরগীব (উৎসাহ) দিত না। নিজে নিজেই। আর আগেও ভাল পজিশনের মূল্য তার কাছে ছিল কিন্তু শুধু দুনিয়ার ফায়দা হিসেবে। এখন গিয়ে দেখছে ভাল পজিশনে গেলে দুনিয়া তো আছেই, জান্নাতও কিনা যায়। এখন দেখছে টাকা-পয়সা যার কাছে আছে, তবলীগের মুরব্বীদের কাছে হাই পজিসন, মাশওয়ারাতেও তার কথা খুব চলে। আর যার টাকা-পয়সা নেই, ও সেরকম পাত্তা পায়না। ও শুধু মোকামি কাজ করে। তাই মার্কাজে আমার দরকার আছে। এজন্য শুদ্ধ নির্দেশনা খুব জরুরী। আল্লাহওয়ালাদের সহবত, আল্লাহওয়ালাদের জীবনের চর্চা, হায়াতুস সাহাবা, ফাযায়েলে সাদকাত আর খুজে খুজে যেখানে কোন নির্ভরযোগ্য লোক মনে হয় যে দ্বীন বুঝে এরকম হাবভাব-লক্ষন, দুয়াও করা তাদেরকে পাবার জন্য। তো সেইসব লোকের সাথে সম্পর্ক বাড়ানো যাতে আমি ভুল রাস্তায় না পড়ে যায়। দ্বীনের মধ্যে এসে যদি কেউ ভুলের মধ্যে পড়ে যায়, ওর তো আর সংশোধনের কোন জায়গা নেই। ঐ যে প্রচলিত একটা কথা আছে। যেই তেল দিয়ে ভুত নামাবে, সেই তেলেই যদি ভুতের আছর থাকে তাহলে ভুত নামানোর জন্য যতই তেল দিক ওতে ভুত বাড়বে আরো।
সেজন্য দ্বীনের ময়দান যেন পাক থাকে, পবিত্র থাকে, চেষ্টা দুয়া করতে থাকা। কয়েকটা জিনিস। সুন্নতের উপর যদি আমরা ইহতাম করি; গরীব মিসকীনের সাথে বেশি উঠাবসা করা। শরীয়তে এর খুব তাগিদ আছে। রিয়াদুস সালেহীন কিতাবের মধ্যে সম্পূর্ণ বাব আছে ‘গরীব মিসকীনের সাথে উঠাবসা করা’। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাকে পছন্দ করতেন, তরগীব দিয়েছেন। এতে নিজের দ্বিলের মধ্যে মালের মোহ, পরিচিতি খ্যাতির মোহ ওগুলো কমবে। আর যদি বড়লোকের সাথে বেশি উঠাবসা করা হয়, তো নিজের মনের ভিতর এগুলোর মোহ ঢুকবে। আর যখন এইসব মোহ ঢুকবে তখন তার বুদ্ধি নষ্ট হয়ে যাবে। ও তখন নিজেই সব কথাকে প্যাচাবে। তখন ওর মনে হবে যে আমার অনেকে টাকা দরকার। কিসের জন্য; বলে যে দ্বীনের খেদমত করব। দ্বীনের খেদমত কিরকম? এই যে বাড়িতে মাস্তুরাতের জামাআত আনতে পারবো। আর মাস্তুরাতে জামাআত আসলে, বিদেশের জামাআত আসলে যেহেতু তারা একটু ভাল পজিশনে থাকে, তাই বিরাট বাড়ি হবে। বাড়ির গেইটও দুটো আলাদা হবে। পুরুষের জন্য আলাদা গেইট, মাস্তুরাতের জন্য আলাদা গেইট।
আর বড় গাড়ি হবে যে গাড়ির কাঁচ এমন হবে যে বাইরে থেকে ভিতর দেখা যায় না, পর্দা রক্ষা হবে। মাস্তুরাতের জামাআতগুলো যখন আনবো তখন যেন কোন অসুবিধা না হয়। এইসবগুলো পিউর আল্লাহর ওয়াস্তে। আমার নফসের কোন তাকাজা নাই। এগুলো সব দ্বীনের খেদমত করবার জন্য।
শয়তান বুঝায়। শুধু নিজের নফস চায় তো ঐটাতে একটু কেমন কেমন লাগে বলতে। এজন্য দ্বীনের খেদমতের কথা বলে। আর যদি ঐরকম বড় বাড়ি-গাড়ি থাকে তো মুরব্বীদেরও খেদমত করতে পারবো, মুরব্বীদের দুয়া পাবো। আর আল্লাহওয়ালাদের যে দুয়া পাওয়া যায় ওতেই পার পেয়ে যাবো। আর ভাল দুয়ার জন্য একটা ভাল গাড়ীর দরকার। এই দুইনম্বর গাড়ি দিয়ে কোন হাই ক্লাস দুয়া পাওয়া যাবেনা। হাই ক্লাস দুয়া পেতে হলে হাই ক্লাস গাড়ির দরকার। তো ও এসব চক্করের মধ্যে পড়ে যায়। আর তার কাছে এসব কথা ঠিক মনে হবে যেহেতু নিজের মন চাচ্ছে। এজন্য ভাই আল্লাহর পথে বের হয়ে……। শুধু বের হওয়া নয় বরং বের হওয়া, দুয়া করা আর আল্লাহওয়ালাদের সহবত খুজা, গরীব মিসকীনদের সাথে বেশি উঠাবসা করা, ফাযায়েলে সাদাকাত পড়া বিশেষ করে ঘরের মধ্যে ইনফিরাদিভাবে আর এটাকে বাড়ানো। ফাযায়েলে সাদাকাতের চর্চা যদি খুব থাকে তাহলে ইনশাআল্লাহ ওটা আমার মধ্যে অনেক ভুল ত্রুটি কাটাবে। এই ফাযায়েলে সাদাকাতের কিতাব যে হযরত শাইখ লিখেছেন, কোন ফালতু লিখেননি। অথচ ওটার কোন চর্চাই নেই। এজন্য আল্লাহর পথে বের হওয়া। ঠিক আছেনা ইনশাআল্লাহ……
سُبْحَانَ اللّهِ وَ بِحَمْدِهَ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْك سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُون وَسَلَامٌ عَلَى الْمُرْسَلِينَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينََ
২ Comments
yUQZp NWUkRlXa narE
vgrsmzgqzedjpmrykwyufnkilsjeyl